• ঢাকা
  • শনিবার:২০২৪:এপ্রিল || ১২:৫৫:০২
প্রকাশের সময় :
জুলাই ৭, ২০২৩,
৩:৩৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট :
জুলাই ৭, ২০২৩,
৩:৩৫ অপরাহ্ন

৪৫৬ বার দেখা হয়েছে ।

না.গঞ্জে বাড়ছে ডেঙ্গু, ক্রিটিক্যাল অবস্থায় পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়

না.গঞ্জে বাড়ছে ডেঙ্গু, ক্রিটিক্যাল অবস্থায় পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়

নারায়ণগঞ্জে প্রতিনিয়ত বাড়ছে এডিস মশাবাহিত প্রাণ সংহারী রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিনই জেলার সরকারি হাসপাতাল গুলোতে রোগী আসছে। মশক নিধনে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা থাকলেও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে চলছে গতানুগতিক কার্যক্রম। তবে, স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে ‘মশক নিধন কর্মসূচি বাড়ানোর পাশাপাশি সর্তকতা না বাড়ানো হলে ডেঙ্গু আরও ছড়িয়ে মৃত্যুর আশষ্কা রয়েছে।
সবে মাত্র সম্পন্ন হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলমান ধর্মলম্বীদের এই ধর্মীয় উৎসবে গরু কুরবানিকে কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকা গুলোতে বিভিন্ন স্থানে জমাট বেধে আছে ময়লা পানি ও রক্ত মিশ্রিত পানি। মূল রাস্তার ময়লা সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা পরিস্কার করলেও বিভিন্ন বাড়ির পাশে অলি-গলিতে এখনো জমাট বেধে আছে এই রক্ত মিশ্রিত পানি। স্থানীয়দের দাবি, যার যার বাড়ির সামনের এবং ছাদের রক্ত মিশ্রিত জমাট পানি নিজ দায়িত্বে পরিস্কার করলে মশার প্রজনন কমে যাবে, এতে মশার উপদ্রব থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে। তবুও সাধারণ মানুষের সচেতনতা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশরেনর ১৩নং ওয়ার্ডের গলাচিপা এলাকার বাসিন্দা মো. আল মেহেদী জানান, আমাদের বাড়ির পাশেই কোরবানির রক্ত জমাট পানি এখন অব্দি পরিস্কার করা হয়নি। টানা ২দিন বৃষ্টির কারণে এই পানির পরিমান আরও বেড়ে যাওয়ায় দিন দিন মশার পরিমানও বাড়ছে। এগুলো নিজ দায়িত্বে পরিস্কার তো করছেই না, বরং ঝুঁকির পরিমান আরও বাড়ছে। সিটি কর্পোরেশন ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ডেঙ্গুর রোগীর পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছে নতুন নতুন রোগী। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, নারী এবং পুরুষের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রয়েছে হাসপাতালে। রয়েছে পযার্প্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা। করোনার মতো ডেঙ্গুর মোকাবিলা করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুত আছেন তাঁরা।
নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা তত্তাবধায়ক (উপ-পরিচালক, স্বাস্থ্য) ডা. মো. আবুল বাসার বলেন, বর্তমানে আমাদের হসপিটালে ৫জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। তবে এদের সবাই মোটামুটি উন্নতির দিকে আছে। আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমানের ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ব্যবস্থা আছে। আমরা করোনার মতো ডেঙ্গুকেও প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবো। তবে আমাদের সর্বপ্রথম যেটা করতে হবে। সেটা হলো মানুষকে সতেচন করতে হবে। আমরা স্বাস্থ্যকর্মী, প্রশাসন ও সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে ডেঙ্গুর আক্রমণ থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আপাতত সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে যদি কোন রোগী ক্রিটিক্যাল অবস্থা থাকে তাহলে তাকে ঢাকায় রেফার করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে ২৪ ঘন্টায় ১জন রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে মোট ২জন রোগী ভর্তি আছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এখন পর্যন্ত ১৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ জন সুস্থ হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন মৃত্যু হয়নি ডেঙ্গুতে। এ বছর সর্বোচ্চ আক্রান্ত হয়েছে জুন মাসে।
জানা যায়, এই হাসপাতালে ২০২২ সালে মোট ১৯৭জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এর মধ্যে কোন মৃত্যুর সংখ্যা নেই।
অন্যান্য বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সাধারণত জুন থেকে অক্টোবর হচ্ছে ডেঙ্গুর মৌসুম। আর ডেঙ্গু রোগী বেশি থাকে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে। অক্টোবরের পর আক্রান্তের হার কমতে শুরু করে। নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান দুটি সরকারি হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ৫-৬ জন ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা গ্রহণ করছে। এর মধ্যে গড়ে পুরো নারায়ণগঞ্জে ১০-১২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান বলেন, নারায়ণগঞ্জে বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কমতির দিকে। অসুস্থ হওয়ার পর যারা পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে জানতে পারেন ডেঙ্গতে আক্রান্ত তারা কেবল হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে বেশির ভাগ রোগী বাড়িতে চিকিৎসা নেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে মশক নিধন কর্মসূচি বাড়ানোর পাশাপাশি সর্তকতা না বাড়ানো হলে ডেঙ্গু আরও ছড়িয়ে মৃত্যুর আশস্কা রয়েছে।
অন্যদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মশার উপদ্রব ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে কর্মসূটি চলছে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ জন করে ১৩৫ জন কর্মী কাজ করছে। তবে সেটি প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। পাশাপাশি জলাশয়গুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করা ও সড়কে ময়লার স্তুপে মশার প্রজননক্ষেত্র পরিণত হয়েছে বলে জানায় এলাকাবাসী। তাছাড়া মশক নিধন কর্মসূচি দূর্বল হওয়ায় পাড়া-মহল্লার ডেঙ্গু রোগী বাড়ার আশংস্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেডিকেল অফিসার ডা. শেখ মোস্তফা আলী বলেন, আমরা কোন তথ্য দিতে পারবো না। আমাদের মেয়র মহদয়ের নির্দেশ আছে তথ্য না দেয়ার জন্য। সময় নিয়ে অফিসে আসেন মেয়র মহদয়ের অনুমতি নিয়ে তথ্য দিবো।