• ঢাকা
  • শুক্রবার:২০২৪:এপ্রিল || ১৯:৪০:৩০
প্রকাশের সময় :
জানুয়ারী ১, ২০২৩,
৪:৪৬ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট :
জানুয়ারী ১, ২০২৩,
৫:১৫ অপরাহ্ন

৩৭৭ বার দেখা হয়েছে ।

এখনকার পলিটিক্যাল ডিপ্লোমেসি হবে না, ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি হবে: প্রধানমন্ত্রী

এখনকার পলিটিক্যাল ডিপ্লোমেসি হবে না, ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি হবে: প্রধানমন্ত্রী

পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২৩ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখনকার ডিপ্লোমেসি পলিটিক্যাল ডিপ্লোমেসি হবে না, ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি হবে। প্রত্যকটা দূতাবাসকে রপ্তানি বাণিজ্য, কোনো দেশে কোন পণ্যের চাহিদা বেশি, আমরা কী রপ্তানি করতে পারি বা কোথায় থেকে আমরা বিনিয়োগ আনতে পারি, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার নিদের্শ দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছি, ওই এলাকার বাংলাদেশের যারা রাষ্ট্রদূত তাদের ডেকে সেভাবে ব্রিফিং করেছি। আবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সেটা বলে দেয়া আছে। দূতাবাস চেষ্টা করবে, কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা আছে। আমরা সেটাই রপ্তানি করতে চেষ্টা করবো। এ ভাবেই বাণিজ্য বৃদ্ধি করবো।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা রপ্তানিযোগ্য কিছু পণ্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। সেটাকে বহুমুখী করার কথা, আমি বার বার একথা বলে যাচ্ছি, এখনও বলছি, যত বেশি পণ্য বহুমুখি করতে পারব; যত বেশি নতুন নতুন বাজার পাবো, তত বেশি পণ্য রপ্তানি করতে পারব। মানুষের যাতে কর্মক্ষমতাও বাড়ে সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, সেজন্য আমি সবাইকে আহ্বান করেছি- এক ইঞ্চি জমিও যেন পড়ে না থাকে। একশ’ অঞ্চলে আপনারা নানা ধরনের ব্যবসা করেন, খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাত করেন। আমরা মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। মাছের চাহিদা এখন অনেক বেশি। এমন কী কাঁচা কাঁঠালের কী পরিমাণে চাহিদা বেড়েছে এটা আপনারা চিন্তাও করতে পারবেন না। অবশ্যই একটা ভালো সুখবর আছে, বারো মাস যাতে কাঁঠাল উৎপাদন হয় আমাদের গবেষকরা তার ব্যবস্থা করেছে। কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল।
তিনি আরও বলেন, যে সমস্ত কৃষিপণ্য, পাট, চা, তরি-তরকারি, শাক-সবজি, ফল-মূল যাই আমাদের উৎপাদন হচ্ছে; সেগুলো দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি জন্য প্রক্রিয়াজাত করা। খাদ্যের চাহিদা আমার মনে হয় কখনও বন্ধ হবে না। সারাবিশ্বে খাদ্যে মন্দা এবং পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য একটা সুযোগ রয়েছে। আপনারা খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তুলুন। তাতে আমাদের দেশীয় উৎপাদকরা যেমন লাভবান হবে, কর্মসংস্থানও হবে। পাশাপাশি রপ্তানির জন্য নতুন পণ্য হবে। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম সব কিছু আমরা উৎপাদন বাড়াতে সক্ষম হয়েছি। যত বেশি খাদ্য রপ্তানি হবে তত বেশি সুবিধা হবে। এভাবে কাজ করলে আমরা আরও বেশি রপ্তানি বাড়াতে পারব। আমাদের দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আপনারা কাজ করবেন।
সরকার প্রধান বলেন, বিদ্যুৎ আর গ্যাস যদি একেবারে নিবচ্ছিন্নভাবে চান, এগুলো ক্রয় করতে বা উৎপাদন করতে যে খরচ হবে সেই খরচের দামটা দিতে হবে। কত আর ভর্তুকি দেয়া যাবে। ভর্তুকি তো জনগণের টাকা, এতো বেশি দেয়াও যায় না। ব্যবসায়ী বা ইন্ডাস্ট্রিয়ালদের এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই মেলায় আমাদের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উৎপাদিত পণ্যে সমরোহ ঘটবে। দেশি-বিদেশি পণ্য নিয়ে সবাই আসবে। আমাদের অভিজ্ঞতা বাড়বে। সেদিক থেকে আমি মনে করি মেলা সফল হবে। সারা বিশ্বে একটা মন্দা চলছে, তার প্রভাবটা আমাদের বাণিজ্যে কিছুটা আসবে। আমাদের দেশে ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে। আমরা সেভাবে একটা বিরাট মার্কেট তৈরি করতে পারি।
বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ইস্ট, ওয়েস্ট, নর্থ সাউর্থের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি। এই সুযোগটা নিয়েই বেশি বেশি পণ্য উৎপাদন করতে পারব, রপ্তানি করতে পারব, বাণিজ্য করতে পারব। এছাড়া সেবাখাতের উন্নতি করতে পারব। আমরা পর্যটক টানতে পারব। অনেক সুবিধা আমাদের সামনে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৭ সালে যখন জেলে ছিলাম তখন ওখানে লিখে রেখে ছিলাম ২০২১ সালে কী কী করব। ২০২১ সালের ভেতরে বাংলাদেশকে কীভাবে উন্নত করব। ২০০৮ নির্বাচনে সেটা সংযুক্ত করে আরও উন্নতমানের সেই টার্গেট অর্জন করেছি। এখন লক্ষ্য ২০৪১ সাল। ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হবে, ৪১ সালে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। দ্বিতীয়টা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রত্যকে ডিজিটাল ডিভাইস সম্পর্কে দক্ষ হবে। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট বিজনেস, স্মার্ট হেলথ, স্মার্ট এডুকেশনসহ সব কিছু আমরা করব। এসময় সবাইকে ২০২৩ সালের ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, হ্যাপি নিউ ইয়ার।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২৩ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, এফবিবিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এ এইচ এম আহসান প্রমুখ।